হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন আলামজাদেহ নুরি হাওজা নিউজ এজেন্সি’র সাথে এক সাক্ষাৎকারে জোর দিয়ে বলেন, ধর্মীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও সামাজিক সক্রিয়তা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, একজন শিক্ষার্থীকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন সে নিজেকে সমাজ থেকে আলাদা মনে না করে এবং শুধু ভোক্তা বা নিষ্ক্রিয় না হয়ে বরং একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে সামাজিক অঙ্গনে অবদান রাখে।
তিনি আরও বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তত্ত্বাবধান ও প্রশিক্ষণ বিভাগে বিভিন্ন কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসাভিত্তিক কার্যক্রম, যেমন মাদ্রাসার হেযব, বাসিজ, দারুল কুরআন ও দারুল মা'আরেফে অংশগ্রহণ। এছাড়াও, স্কুলের বাইরের কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যাতে মাদ্রাসা তার পরিবেশের বাইরেও প্রভাব রাখতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে মসজিদ, স্কুল, পার্ক ও স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন আলামজাদেহ নুরি শিক্ষার্থীদের জিহাদী কার্যক্রমের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জিহাদী কার্যক্রম হলো মাদ্রাসার বাইরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি, যেখানে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে দরিদ্র ও প্রয়োজনীয় মানুষের জন্য নির্মাণ ও সাংস্কৃতিক সেবা প্রদান করে। এই কার্যক্রম শুধু মানুষের আর্থিক ও আধ্যাত্মিক সমস্যা সমাধানেই সাহায্য করে না, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিহাদী চেতনা ও ত্যাগের মনোভাবও জাগ্রত করে।
তিনি আন্তঃমাদ্রাসা ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কর্মসূচির কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আন্তঃমাদ্রাসা কর্মসূচিতে একটি শহর বা প্রদেশের একাধিক মাদ্রাসা একসাথে কাজ করে বৃহত্তর সমাবেশের আয়োজন করে এবং আরও বেশি সামর্থ্য তৈরি করে। আরও উচ্চ পর্যায়ে, তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলাম, বিপ্লব ও ইসলামী সভ্যতার প্রয়োজনীয়তাকে লক্ষ্য করে আন্তর্জাতিক কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে।
তিনি শহীদ রাজিনীর জিহাদী শিবিরের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই শিবিরে প্রদেশের তত্ত্বাবধায়করা অংশগ্রহণ করেছেন যাতে তারা এর প্রশিক্ষণমূলক সুবিধা থেকে উপকৃত হতে পারেন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিহাদী আন্দোলন পরিচালনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। একজন শিক্ষার্থী যদি জিহাদী চেতনা নিয়ে গড়ে ওঠে, তবে সে তার সমস্ত জীবন ও শিক্ষাকে নিঃস্বার্থভাবে ইসলামের মহান উদ্দেশ্য ও মানুষের সেবায় নিয়োজিত করবে।
তিনি শেষে জোর দিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের সর্বদা ত্যাগ ও ইসলামী উম্মাহর সেবার চেতনা শক্তিশালী করার চেষ্টা করা উচিত। প্রতি বছর দরিদ্র ও প্রয়োজনীয় মানুষের সেবায় অংশগ্রহণ শুধু এই চেতনাকে জীবন্ত রাখে না, বরং ভবিষ্যতে বড় ভূমিকা পালনের জন্য তাদের প্রস্তুত করে। আলহামদুলিল্লাহ, জিহাদী চেতনা ও নিঃস্বার্থ সেবা আমাদের ধর্মীয় শিক্ষার ঐতিহ্যে গভীরভাবে প্রোথিত এবং এটিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
আপনার কমেন্ট